“নৈঃশব্দের বিদ্যা”
গোরস্থানের
ভিতর মফস্বলের অন্যমনস্ক বাতাস।
ওখানে
নির্বিকার দুপুর ।
জারুলের
ডালে পাখিদের ভাতঘুম।
ওখানে
কিছুটা মৃত্যু কম।
ধুমনদীর
সাঁকো পেরিয়ে, বিচ্ছিন্ন গণিত আর ক্যালকুলাসের বিকেলগুলোতে আমি ওখানে যাই। প্রায়। পাঁচিল
টপকাই। ঠোঁটের কিনারায় লেগে থাকা লালা মুছি হাতের উল্টোপিটে।
ওখানে ঘুমোনোর জন্য বিছিয়ে দেয়া ঘাসে, কবরের ফাঁকফোকরে
নৈঃশব্দের বিদ্যা হাতড়াই।
“ইকো অব ব্লাইন্ডনেস”
রেললাইনের
মত দীর্ঘতর বিষাদে লালমনির হাট এক্সপ্রেস উত্তরে মিলিয়ে যাচ্ছে । ট্রেনের
কোন এক বগিতে জন লেনন… হাতে পুরোনো গিটার।
আমার
ওখানে থাকার কথা ছিল বোধহয় । লেননের পিছু পিছু,
“নোবডি টোল্ড মি”র সুরে আমার বোধহয় একদিন অন্ধ হয়ে যাবার কথা ছিল।
অথচ,
৫ বছর আগের এক সামারে ঈশ্বরদী জংশনে আমার সমস্ত অন্ধত্ব জব্দ হয়ে গেছে!
“বাদাম বৃক্ষের শহর”
দেয়ালের কাছাকাছি
অন্তরঙ্গ কিছু দৃশ্য
পরম শূন্যতায় নিজের কাছে ফিরে আসি
এইসব হেয়ালী সলিলুকি
বাদাম বৃক্ষের তলে আমারই বিপন্ন অ্যান্টি-ম্যাটার
চোখের নিচে কাপাশিয়া মাঠের ছায়ায় এই যে পাঠলুপ্ত বেলা কাটছে… ছেঁড়া কাগজে নীল মাছির ভন ভন। সিন্দুকে লুটেরা ঘোড়ার দৌড়। সব ছাপিয়ে ক্যান্টনমেন্ট সড়ক, সড়কের আনাচে কানাচে আইসক্রিম ঘন্টি। সোমবার শহর জুড়ে নিবিড় দুপুর জানালার গ্লাসে ঘেমে উঠে বারবার।
রুমফ্রেসনারের কড়া গন্ধে পার হওয়া এই সব দিনগুলির নাম মাইগ্রেন । আর আমি কিছুটা কমে আসা চোখের আলোয় রাফখাতা উল্টাই । রাফখাতা ভর্তি বিকলাঙ্গ নুনিয়া শাকের মনস্তাপ । পাতায় পাতায় মনস্তাপের ইকো।
এখানে বাদাম বৃক্ষের শহরে-
লাল কুকুরদের চোখে শ্মশানের ছাই ।
ক্যাথলিক চার্চের উপর ক্রুশ ডানায় জলাতঙ্ক কাক ।
এখানে প্রতিটা বাড়ি জন্মান্ধ পাখির হৃদপিণ্ড; জানালা গুলো শামুকের ঘুম- সমুদ্রে ধাবমান।
এখানে রাত বাড়লে নিয়নের স্তব্ধ আলোয় একাকী শহর নৈঃশব্দের সঙ্গীতে সম্মোহিত এক কান্নাঘর।।
দেয়ালের কাছাকাছি অন্তরঙ্গ কিছু দৃশ্য।
পরম শূণ্যতায় নিজের কাছে ফিরে আসি, বারবার।
কাশিয়াডাঙ্গা পেরিয়ে বার মাইল দূরে যে মধ্যরাতটা দাঁড়িয়ে থাকে, কালো কাপড়ে ঢাকা। রুমালের মত । ওখানে কিছু ছটপট পায়ের শব্দ। রাতভর আমি দুয়ারের ভিতর দাঁড়িয়ে আরেক দুয়ার হাতড়াই । যে দুয়ারের চারকোনা ফ্রেমে আঁটকে আছে– নয়ার দিঘী, দোয়ানীবাজার, খানসামা হাটের অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট।
পরম শূন্যতায় নিজের কাছে ফিরে আসি
এইসব হেয়ালী সলিলুকি
বাদাম বৃক্ষের তলে আমারই বিপন্ন অ্যান্টি-ম্যাটার
চোখের নিচে কাপাশিয়া মাঠের ছায়ায় এই যে পাঠলুপ্ত বেলা কাটছে… ছেঁড়া কাগজে নীল মাছির ভন ভন। সিন্দুকে লুটেরা ঘোড়ার দৌড়। সব ছাপিয়ে ক্যান্টনমেন্ট সড়ক, সড়কের আনাচে কানাচে আইসক্রিম ঘন্টি। সোমবার শহর জুড়ে নিবিড় দুপুর জানালার গ্লাসে ঘেমে উঠে বারবার।
রুমফ্রেসনারের কড়া গন্ধে পার হওয়া এই সব দিনগুলির নাম মাইগ্রেন । আর আমি কিছুটা কমে আসা চোখের আলোয় রাফখাতা উল্টাই । রাফখাতা ভর্তি বিকলাঙ্গ নুনিয়া শাকের মনস্তাপ । পাতায় পাতায় মনস্তাপের ইকো।
এখানে বাদাম বৃক্ষের শহরে-
লাল কুকুরদের চোখে শ্মশানের ছাই ।
ক্যাথলিক চার্চের উপর ক্রুশ ডানায় জলাতঙ্ক কাক ।
এখানে প্রতিটা বাড়ি জন্মান্ধ পাখির হৃদপিণ্ড; জানালা গুলো শামুকের ঘুম- সমুদ্রে ধাবমান।
এখানে রাত বাড়লে নিয়নের স্তব্ধ আলোয় একাকী শহর নৈঃশব্দের সঙ্গীতে সম্মোহিত এক কান্নাঘর।।
দেয়ালের কাছাকাছি অন্তরঙ্গ কিছু দৃশ্য।
পরম শূণ্যতায় নিজের কাছে ফিরে আসি, বারবার।
কাশিয়াডাঙ্গা পেরিয়ে বার মাইল দূরে যে মধ্যরাতটা দাঁড়িয়ে থাকে, কালো কাপড়ে ঢাকা। রুমালের মত । ওখানে কিছু ছটপট পায়ের শব্দ। রাতভর আমি দুয়ারের ভিতর দাঁড়িয়ে আরেক দুয়ার হাতড়াই । যে দুয়ারের চারকোনা ফ্রেমে আঁটকে আছে– নয়ার দিঘী, দোয়ানীবাজার, খানসামা হাটের অ্যাবস্ট্রাক্ট আর্ট।
“দ্য লাভ”
সন্ধ্যাকালীন
ট্রেনে যে মেয়েটা এসেছে
তার
গায়ে দিনাজপুরের একরাশ বাতাস ।
এখানে
একটা রাত পার্পল আলোতে দাঁড়িয়ে আছে ৷ রাতের ব্যাকগ্রাউন্ড জুড়ে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান কোন
আদিম সুরের তর্জমা । আমাদের প্রেমে পড়াপড়ি
শেষ হলে, আমরা ঘুমাব খুব... পরিত্যক্ত ট্রেনের বগির মত ।
আমাদের
শহর আজ একরাশ দিনাজপুর...
“ক্যামেরার ভাষা”
এই
ঝাপসা অন্ধকারে মেন্যুয়াল এক্সপোজার প্রযোজ্য
শাটার স্পিডঃ ওয়ান বাই ফোরটি
আইএসওঃ থার্টি টু হান্ড্রেড
জুম ইন করতে করতে লেন্সে ধরা পড়ল, নুনের গীত গাওয়া একটা লোকের মুখ... প্রতি বৃহস্পতিবার লোকটি বারের টেবিলে হু হু করে কেঁদে উঠে। যার শূন্য মদের গ্লাসে বাতাস ঘেমে উঠে বারবার।
শাটার স্পিডঃ ওয়ান বাই ফোরটি
আইএসওঃ থার্টি টু হান্ড্রেড
জুম ইন করতে করতে লেন্সে ধরা পড়ল, নুনের গীত গাওয়া একটা লোকের মুখ... প্রতি বৃহস্পতিবার লোকটি বারের টেবিলে হু হু করে কেঁদে উঠে। যার শূন্য মদের গ্লাসে বাতাস ঘেমে উঠে বারবার।
"ডেজা
ভ্যু "
প্লাটফর্মের আবহাওয়ায় একটা স্যাঁতসেঁতে নেবু বাগান
ঢুকে পড়েছে ।
আমি জানতাম, তুমি এভাবে বসে থাকবে,
কোলে ডান হাতের উপর বা হাত রেখে । পূবদিক থেকে একটা হল্লা বাতাস এসে নিম গাছটা নাড়িয়ে দিবে... কিছু
হলদে-সবুজ পাতা পড়বে তোমার পায়ের কাছে (ওইতো পড়ে রইল পাতারা) ।
তুমি যা বলছ তা আমি জানতাম
আর যা এখনও বলনি তাও ।
হাজারটা মৃতকল্প ঢেকে দিতে দিতে ট্রেনটা তোমাকে নিয়ে যাবে ভাওয়ালের
শালবন পেরিয়ে দক্ষিণে, আরও দক্ষিণে । একটা বিষন্ন সুন্দর সকালের গা থেকে তুমি আরও একবার "নাই" হয়ে যাবে ।
প্লাটফর্মের আবহাওয়ায় নেবুর ঘ্রাণ
ভিতরে কত জল, কত নালিশ
আমি শুধু শুধু বসে রব দুপুর বেলাটাতেও
ফেরার পথে ভূতগ্রস্থ আমি রেললাইনে হোঁচট খাব
আবারও আমার পায়ের নখাগ্রে শীতল রক্ত
এইখানে আজ আকাশ, বদল হওয়া এক দুপুর;
আমি বধ হতে থাকব নবীনগড় পাঠাগার অবধি... এক অন্তহীন সড়কের নামে ।
তোমার প্রস্থানদৃশ্যের স্কেচ আমাকে আরও একবার আঁকতে
হবে
“নির্বাণ”
বাজারে
একটা লোক এসেছে, বহু দেশ-বিদেশ ঘুরে এসে সবাইকে অদ্ভুত একটা গল্প শোনাচ্ছে…
“দক্ষিণ-পূর্বে
নাকি একটা দেশ আছে, সেখানে সবার আধা অন্ধ হয়ে যাওয়া চোখ । চোখের
মনিতে পিপুল বীজ নিয়ে ঘুরে বেড়ায় কেউ কেউ ৷ আর কারও কারও চোখে আমলকী, বহেরা, ম্যাগনোলিয়া
বীজ৷
গম্ভীর
সূর্যাস্তে ওখানে কিছুটা নিরাকার জনপদ৷
কিছুটা
মুখোশহীনতায় হাওয়া বদল৷
ওখানে
লাল কখনও কখনও হলুদ হয়ে উঠে, হলুদ হয় সবুজ
আর
সব রঙ অন্ধকারের প্রতিধ্বনি৷
যখন
অন্ধত্বে নির্বাণ লাভ করে কেউ, সে একটা গাছ হয়ে যায়।
তখন
স্পর্শে বিচরণ।
স্পর্শের
তীব্রতর অনুভূতিতে বোধদয়। ”
দক্ষিন-পুর্বে
একটা দেশ আছে, সেখানে সবাই একদিন গাছ হয়ে যায়৷ একটা গাছ জীবন পায়।
“শিকড়ের অপভ্রংশ”
চুলার
ব্রত ভেঙ্গে সাম্যবাদের গন্ধ
কেঁপে
ওঠা মনে এই সব ঢের পুরানো কিচ্চা,
নারীর
বুকে দুধের অস্তিত্ব লোপ পেলে
শিশু ও প্রেমিক উভয়েই প্রতারক হয়ে ওঠে ।
শিশু ও প্রেমিক উভয়েই প্রতারক হয়ে ওঠে ।
ঝাঝালো
বারুদের দম, বিবেকহীন কাঁটাতার । খামাখা দেশ বিদেশ, শহর,
বন্দর করে করে... ঘরে এসে জানালা খুলতেই অস্তিত্বের শিকড়ে টান। গোপনে
সঞ্চিত হয় নুনের অনুবাদ যদিও সমুদ্দুর বহু দূর . . .
চৌচির
রোদ্দুরে
ভেঙ্গে
পড়া এপিটাফ
হৃদপিন্ডহীন
শবের ভেতর পোকারা একেকটা জীবন
সেখানেই
সঞ্চারিত হয় তাদের প্রেমলীলা
এ
যেন আরেক মথুরা
মূলত
এখানে মাটির তৃষ্ণা রচনা করে জীবনের সন্ধিপত্র
আর
কখনও কখনও উপবাস ও সহবাস দুই মানুষকে গৃহী করে তোলে।
“আয়না মুখ”
আয়নার ভিতর একটা মুখ
ঠিক মুখ না, মুখের আদল ;
ওখানে কখনও কোন গ্রন্থের পরিসমাপ্তি দেখিনি।
কখনও কখনও সরাইখানায় গেলে
অপ্রাপ্যের শোক বেমালুম ভুলে যাই
কদাচিৎ আমার মুখে ভর করে আয়নামুখের রেখাসমূহ,
আর তখন আমি ঈশ্বর এবং শয়তানের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে
ধাবিত হই পরিপূর্ণ একটা অপাঠ্য গ্রন্থের দিকে।
আয়নার ভিতর একটা মুখ
ঠিক মুখ না, মুখের আদল ;
ওখানে কখনও কোন গ্রন্থের পরিসমাপ্তি দেখিনি।
কখনও কখনও সরাইখানায় গেলে
অপ্রাপ্যের শোক বেমালুম ভুলে যাই
কদাচিৎ আমার মুখে ভর করে আয়নামুখের রেখাসমূহ,
আর তখন আমি ঈশ্বর এবং শয়তানের মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে
ধাবিত হই পরিপূর্ণ একটা অপাঠ্য গ্রন্থের দিকে।
“প্রস্থানদৃশ্য”
এখানে
আমি আর নেই… জানালার কাঁচে ঝুপ করে নামা সন্ধ্যার গা থেকে কেউ আমাকে ইরেজারে মুছে
দিয়েছে । তোমার পাশ ফেরা শূন্য বালিশে অবেলায় উঠে যাওয়া কিছু চুল শুধু শুধু । ঘর জুড়ে ফেলে রাখা কাপড়ে নির্লিপ্ততার ঘ্রাণগুলো বিনাশ্রমে হারিয়ে
যাবে যে কোনো দিন।
একটা দিনের রেন্ডম ডেটায় আমি আর নেই…
একটা দিনের রেন্ডম ডেটায় আমি আর নেই…
বাতাসের
কোলাহলে একটা বোহেমিয়ান কবর পিঠে নিয়ে আমি কোথাও নেই।
(চিত্রঋণ : Anders Zorn)
র্যান্ডমনেস প্রচণ্ড,অথচ নর্মাল ফলো করে না... বেশ লাগলো...মনে
উত্তরমুছুনখুব ভালো !
উত্তরমুছুনভালো লাগলো ।
উত্তরমুছুন