বাক্‌ ১১০ : জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়




বাইপোলার ১

শিৎকার আর প্রশান্তি  -
পাশাপাশি লিখলাম। 
মাঝে রইল নিবিড় আর নিঝুম। 
না, লেখা নয় 
আসলে আঁচড় ছিল... নিজস্ব গভীরতা নিয়ে। 

আঁচড়ও কোনও ভাষার হরফ হ'তে পারে -
আপাতত এই নিয়ে আন্দোলন চলছে ;
জানলার গরাদ  আর চোখের তারা গলিয়ে
জ্যোৎসনা আসে
 বিক্ষোভ খেতে।
বাইরে বন্ধ তালা সভ্যতার চাঁদমারি হয়ে গেছে। 




বাইপোলার ২

একটা ক্যাকটাসের গায়ে কেরোসিন গন্ধ 
অথচ চারপাশের অন্ধকার হাঁতড়ে 
কোথাও দেশলাই পাওয়া গেল না। 

দু'জোড়া টর্চের আলো দেখেছিল 
এক ভয়ঙ্কর তোলপাড় - 
ইন সার্চ অফ প্যারাডাইস।

ক্রমশ ছোট হচ্ছে কেরোসিন-স্নাত ক্যাকটাস
দূরে চলে যাচ্ছে প্যারাডাইসের খোঁজ।

পিছমোড়া হাতদুটোকে পরের বার বোঝাতে হবে - 
কেরোসিনে ভেজা দেশলাই জ্বলে না... নষ্ট হয় যায়। 



বাইপোলার ৩

কতটা রিফাইন তেলে সূর্যকে ছেড়ে দিলে
একটা সুডৌল পোচ ভেসে উঠবে?

দাঁতে পানের ছোপ ধরা সব ক'টা হাসি 
নানা মাপের ফ্রাইং প্যান ছাড়া আর কীই বা হ'তে পারে?

ডাক্তার বলেছিল - কুসুমটা বাদ দিয়ে খেতে। 
ওই লোহা গলা উজ্জ্বল আগুন বাদ দিলে 
যতটা শাদা পড়ে থাকে, সেই অবশিষ্ট জীবন
টিপে টিপে দেখি... এখনও কতটা কাঁচা থেকে গেল! 




বাইপোলার ৪

বালিশের নীচে ৫ মিনিট 
আর 
মাত্র ৩ মিনিট পেল জলের বালতি।
রুদ্ধশ্বাস অ্যাড্রেনালিন থেকে শ্বাসরুদ্ধ দশা
ব্যর্থতার ব্যবধান আপাতত এইটুকুই।

বিছানায় দাঁড় বেয়ে অ্যাটলান্টিস
আর
অক্সিজেন সিলিণ্ডার ছাড়াই এক জাহাজের অবশেষে
একলা যাপন... গাঢ় অতলান্তিক, 
রাত তিনটেতেই আটকে থাকে। 

ফুসফুসে কতটা জল ঢুকলে দমকে দমকে কাশি,
উগড়ে দিতে হয়ে নোনা জল, বালি...
এইসব না বলে চুপ করে বকুনি খেয়েছি -
 
বমির মধ্যে নুন আর বালি খুঁজতে কেউই রা
জি হয় না! 

                                                                                  (চিত্রঋণ : Sabin Balasa)

১৩টি মন্তব্য:

  1. ভালই। বাইপোলার ৪ টা সেরা

    উত্তরমুছুন
  2. মুগ্ধ হলাম দাদা...এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম...এক ভাবানার জগতে নিয়ে গেলে...

    উত্তরমুছুন
  3. আহা ৪ সেরা,,,,, তবে সব লেখনী-ই অপূর্ব

    উত্তরমুছুন
  4. "আঁচড়ও কোনও ভাষার হরফ হতে পারে"...দারুণ...

    উত্তরমুছুন
  5. চমৎকার সবকটি…খুব ভালো লাগলো……

    উত্তরমুছুন
  6. চারটেই খুব টানলো।কয়েকটা জায়গায় নিউরোন জখমও হলো

    উত্তরমুছুন